Woman of the Millennium


Woman of the Millennium


"Woman of the Millennium", মা দূর্গার অবতার

১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে BBC দ্বারা দেওয়া খেতাব "Woman of the Millennium", "গুঙ্গী গুরিয়া" খুব একটা কথা বলতেন না বলে একটা সময় রাম মনোহর লোহিয়া ওনাকে গুঙ্গী গুরিয়া বলতেন। "মা দূর্গার অবতার" ১৯৭১ এর ভারত পাকিস্থান যুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়া যার পর অটল বিহারী বাজপেয়ী জি ওনাকে মা দূর্গার অবতার বলে আখ্যায়িত করেছিলেন, 

"গুঙ্গী গুরিয়া" থেকে "মা দূর্গার অবতার" পথটা এতটাও সহজ ছিল না, মাতা ইন্দিরা গান্ধীর জন্য।

হ্যায় মাতা ইন্দিরা গান্ধী, কারন একবার একটি সাক্ষাৎকারে উনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল 

এমন একটি নাম যা আপনি চান যে সমগ্র দেশবাসি আপনাকে এই নামে বা এই বলে সম্বুধন করুক বা মনে রাখোক তাহলে সেটা কি হবে? একটি মাত্র শব্দে উনি উওর দিয়েছিলে "মা"

ওনি চাইতেন সমগ্র দেশবাসি জেন উনাকে মা বলেই ডাকেন, মা বলেই সম্বুধণ করেন, স্মরন করেন। 

মাতা ইন্দিরা গান্ধীর সমগ্র জীবনটাই ছিল একটা tragedy তে ভরা।

ওনার জন্ম ও বংশপরিচয় সম্পর্কে তো অনেকেই জানেন, তবে সেই মহান ব্যাক্তিত্ব, তার অবদান বলিদান সম্পর্কে হয়তো ভুলতে বসেছে আজকের মানুষ, নবিন প্রজন্ম হয়তো জানেনই না, তাই সারাবৎসর না হলেও কিছু বিশেষ দিনে তাদের স্মরণ করা তাদের বলিদান সম্পর্কে মানুষ কে স্মরন করিয়ে দেওয়া খুবই আবশ্যক হয়ে দাড়িয়ে। 

ইন্দিরা গান্ধী কি বিশাল ব্যক্তিত্ব যারা দেখেছেন ওনারা সত্যি ভাগ্যবান, আমার সেই ভাগ্য হয়নি বলে নিজে অভাগিনী মনে হয়। 

এইদেশ, দেশের ইতিহাস, দেশের মনীষীদের সম্পর্কে যত পড়ি যত জানি ততই গর্বে বুক ভরে উঠে।

ইন্দিরা গান্ধী:-

ছোটবেলা থেকেই পিতার স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রভাব পড়েছিল মেয়ে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর উপর, তিনি ছোটবেলায় ছোটদের বানর সেনা গঠন করেছিলেন। 

গান্ধীজি'র অসহযোগ আন্দোলনের খুব প্রভাব পড়েছিল। দেশজুড়ে তখন অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাব তুঙ্গে চারিদিকে তখন মানুষ অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে আগুনে বিদেশি দ্রব্যাদির আহুতি দিচ্ছেন।

বাল্যকালেই মাতা ইন্দিরা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে প্যারিস থেকে এক আন্টির আনা উপহার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। 

মাঝখানে কিছু সময়ের জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন, সেই সময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উনাকে প্রিয়দর্শিনী নাম দিয়েছিলেন।

স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে ব্রিটিশ সেনারা, ১৩ মাস অর্থাৎ ১ বৎসরের ও বেশি সময় জেলে বন্ধী করে রেখেছিলেন ফিরোজ গান্ধী ও মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে।

সাহস ও দৃরতার প্রতিক মাতা ইন্দিরা গান্ধী ১৯৪৭ এর ডাঙ্গার সময় গান্ধীজির নির্দেশে শান্তির বার্তা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার সময়, হটাৎ তিনি দেখিতে পান এক ব্যাক্তি তার গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন তার ঠিক পিছে সেই ব্যাক্তিকে মারার জন্য আরো ২০০ লোক দৌড়াচ্ছেন, তখন উনি গাড়ি থেকে নেমে সেই লোকটির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন, তাদের লিডার সামনে এসে বলেন, সরেজাও নাইলে মেরে ফেলব, তখন মাতা ইন্দিরা গান্ধী বলেন "মেরে ফেল, এই লোকটিকে মারতে হলে আগে আমাকে মারতে হবে, ইনি তোমাদের কি ক্ষতি করেছেন? তখন সামনে থেকে সরে যাওয়ার জন্য মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে মেরে ফেলার অনেক ধমকি দেওয়া হয় কিন্তু তিনি সরে যান নি, সাহসের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন, পরবর্তী সময়ে তারা চলে গেল মাতা ইন্দিরা গান্ধী সেই ব্যাক্তিকে ডেকে বলেন ভয় পেওনা সাহস দেখিয়ে সমস্যার সঙ্গে লড়াই করো" এটা ছিল ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিত্ব।


১৫ অগাস্ট, ১৯৪৭ মধ্যরাতে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ভাষণ দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করলেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেন। সময়টি ছিল মাতা ইন্দিরা গান্ধীর জন্য সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত। একই সঙ্গে সময়টি ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং কারণ দেশ স্বাধীন হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ইংরেজ রা দেশ কে সম্পূর্ণ লোট-পাট করে চলে গেলেন। তখন লক্ষ একটাই ছিল কি ভাবে দেশের উন্নতি করা যায়।

মাতা ইন্দিরা গান্ধী ও সক্রিয় রাজনীতিতে নেমে পড়েন, ১৯৫৯ জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী করা হয় মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে।  

৮/০৯/১৯৬০ ইংরেজি ফিরোজ গান্ধী তৃতীয় বারের মত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মাতা ইন্দিরা গান্ধী বিধবা হয়ে যান। স্বামী হারানোর দুঃখ ভোলার আগেই ২৭ মে ১৯৬৪ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু তাঁর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। 

পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর মাতা ইন্দিরা পাথর হয়ে যায়। তখন মাতা ইন্দিরা গান্ধীর অবস্থা খুব একটা ভালোছিল না, ৪ বছরের মধ্যে পিতা ও স্বামীকে হারিয়ে খুবই ভেঙ্গে পড়েছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী। 

পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী হলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী, নেহরুর মৃত্যুর পর মাতা ইন্দিরা গান্ধী রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবার সম্পূর্ণ সিধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী অনেক বুঝিয়ে মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে উনার ক্যাবিনেটের তথ্য সম্প্রসারণ মন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১১ই জানুয়ারি ১৯৬৬ ইংরেজি আচমকায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় লালবাহাদুর শাস্ত্রী জীর। লালবাহাদুর শাস্ত্রী র মৃত্যুর পর সকল জল্পনা কল্পনা কাটিয়ে ভারতবর্ষের প্রথম এবং একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী হলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী।

নতুন অধ্যায় প্রধানমন্ত্রী

কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রীর তাজটি ছিল কাটায় ভরা কোন কিছুই উনার জন্য সহজ ছিল না, তা সত্ত্বেও উনি যে ভাবে সবকিছু গুছিয়ে ছিলেন তা সত্যই প্রশংসনীয়।

দলের অভ্যন্তরে ও বাইরে বিরোধ ছিল তুঙ্গে। বিরোধীরা ঠিক করেছিলেন যেন তেন প্রকারে আক্রমণ। কিন্তু প্রত্যেকটা আক্রমণের জবাব উনি দিয়েছেন উনার কাজের মাধ্যমে। বিরোধীরা ওনাকে যত আক্রমণ করেছেন উনি তত দৃঢ়তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন, উনার একটাই কথা ছিল দেশ সবার আগে।

এরই মধ্যে ইন্দিরা গান্ধী অনেক বড় বড় সিধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যেমন –

1.     ১৯ জুলাই ১৯৬৯ সালে ১৪ টি ব্যাংকের রাষ্ট্রিয় করন করিয়েছিলেন শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। সাধারন জনতা ও কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন বেঙ্কিং পরিষেবা। সাধারণ মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, কৃষকরা যেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের কাজ করতে পারেন তাদের জীবিকা সুনিশ্চিত করতে পারেন সেই ব্যবস্থা ভারতবর্ষে প্রথম চালু করেছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী।

2.     ভূমিহীন ও দুর্বলদের জন্য ভূমিসংস্কার নীতি চালু করে ছিলেন শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী।

3.     ‘সবুজবিপ্লব’ একের পর এক যুদ্ধের ফলে দেশের আর্থিক অবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল, মাতা ইন্দিরা গান্ধীর চিন্তা ছিল কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করা, আগে যেখানে বাইরে থেকে খাদ্য কিনে আনতে হত ‘সবুজবিপ্লব’ এর ফলে ভারত সেখানে নিজেই খাদ্য উৎপাদন করতে শুরু করলো।

 উনার সময়েই ভারত নিউক্লিয়ার শক্তি ও নিউক্লিয়ার স্টেট হয়েছিল।

মাতা ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন সমতায় বিশ্বাসী, তিনি সকল স্তরের মানুষে কে সমান চোখে দেখতেন, তিনি পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় গরীব হাটাও এর স্লোগান দিয়েছিলেন এবং তা বাস্তবায়ন করতে ১৯৪৭ স্বাধীনতার পর থেকে সকল রাজা, মহারাজা, ও নবাব দের পরিবারের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পেনশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল যাকে "Privy purse" বলা হত উনি প্রথম ২৬ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই ব্যাবস্থাকে বন্ধ করেন এবং সেই টাকা গরিবদের জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি মহিলাদের সশক্তি করণের জন্য অনেক কিছু করে গেছেন, তিনি নিজেও একজন সশক্ত মহিলা ছিলেন, তিনি বলেছিলেন মহিলাদের তাদের দক্ষতা প্রনাম করার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন মহিলারা কারুর থেকে পিছিয়ে না, মহিলাদের সঙ্গে কারুর কোন তোলনাই হয় না, একমাত্র মহিলারাই পারে এই সবকিছু সমান ভাবে সামলাতে।

মাতা ইন্দিরা গান্ধী খুবই ভাবনা চিন্তা করে সিধান্ত গ্রহন করতেন। এবং তিনি সত্য বলতে কোনদিন ভয় পেতেন না।

১৯৭১ ইন্দিরা গান্ধী যখন আমেরিকা গেলেন তখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নিকসন তাকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করিয়েছিলেন। কিন্তু মাতা ইন্দিরা গান্ধী তা ভুলেযাননি যখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নিকসন তাঁর সন্মানে খাবারের আয়োজন করেছিলেন, তখন ইন্দিরা গান্ধী একদম নিকসন এর পাশে বসেছিলেন কিন্তু না তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন না তাঁর দিকে তাকিয়েছেন।

১৯৭১ ইন্দিরা গান্ধী আমারিকা থেকে ফিরেই  রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। এবং দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়, চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশ পরস্পরের সুরক্ষার দায়িত্ব গ্রহন করেন।

আমেরিকার প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী ‘Henry Kissinger’ তাঁর বই ‘White House Years’ এ লিখেছেন- যখন ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নিকসনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তখন তিনি এমন আচরণ করেছিলেন যেমন কোন শিক্ষক তাঁর দুর্বল ছাত্রের সঙ্গে করেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।

পূর্ব পাকিস্তান অর্থবল জনবল দ্বারা ক্ষমতাসীন হল পশ্চিম পাকিস্তান সর্বদাই পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের উপর অত্যাচার চালিয়ে গেছে। 

২৫ মার্চ ১৯৭১ রাত ১:৩০ মিনিটে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হলে গোটা পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠে, পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে পাকিস্থানি সেনা সাধারন মানুষের উপর গুলিবর্ষণ করেন এক রাত্রেই কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, খুন ধর্ষণ ও রাহাজানি চলে নির্বিচারে। 

প্রাণ বাঁচাতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে শরণার্থীদের আসতে লাগে ভারতে, তখন সবচেয়ে বেশি শরণার্থী এসেছিলেন ত্রিপুরায়। সেই সময় জাতি ধর্ম বর্ণ সব পিছনে ফেলে দিয়ে সাড়ে পনেরো লক্ষ ত্রিপুরাবাসি ১৪ লক্ষ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন।

মাতা ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানী সেনাদের বার বার সতর্ক করেছিলেন। ইতিমধ্যে পাক বাহিনী আগরতলা সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গোলবারুদ ছুঁড়তে থাকে ফলে প্রথম ধাপেই শরণার্থী সহ প্রায় তিনশ মানুষ আহত হয়ে জিবি হাসপাতালে ভর্তি হন। 

এই আক্রমণ যখন ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হয় তখন ভারতীয় সেনা বাহিনী সার্বভৌম অধিকার রক্ষা করতে পাল্টা আক্রমণ করতে বাধ্য হয়। মোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করে রেগুলার বাংলাদেশী সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় দুর্বার মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়। ১১টি সেক্টরের মধ্যে চারটি সেক্টর পরিচালিত হতো ত্রিপুরার সীমান্ত এলাকা থেকে। পাক বাহিনী ২৫ এপ্রিল থেকে যুদ্ধের শেষলগ্ন পর্যন্ত রাজধানী আগরতলা, পার্শ্ববর্তী শরণার্থী শিবির সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ অব্যাহত রাখে। তাতে ৩০ জুলাই-এর মধ্যে ৭৩ জন নিরাপরাধ ভারতীয় মানুষ নিহত হন।

তৎকালীন সময় মাতা ইন্দিরা গান্ধী স্বয়ং আগরতলায় এসে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন ও ত্রিপুরাবাসীদের যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। 

ভারতীয় সেনাবাহিনী যোদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিলেন, ৩/১২/১৯৭১ মাতা ইন্দিরা গান্ধী কলকাতায় এক জনসভা করেন, সেইদিন বিকেলে পাকিস্তানী বায়ুসেনা ভারতের সীমানা পেরিয়ে পাঠানকোট, শ্রীনগর, জোধপুর, ও আগরার বমানবন্দরে বোমাবাজি করেন। খবর পেয়েই মাতা ইন্দিরা গান্ধী সোজা ম্যাপরুমে চলে যান। সেখানে তাঁকে অবস্থার বর্ণনা দেওয়া হয়। তখন ঘড়িতে রাত ১১ টা সেন প্রধানদের সঙ্গে দেখা করার পর, মাতা ইন্দিরা গান্ধী ক্যাবিনেট মিটিং ডাকেন, বিরুধি দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন তাঁদেরকে ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান, মধ্য রাতে মাতা ইন্দিরা গান্ধী সর্ব ভারতীয় রেডিওর মাধ্যমে দেশ বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন..

ইন্দিরা গান্ধী – কিছুক্ষণ আগে পাকিস্তানী বায়ুসেনা ভারতের পাঠানকোট, শ্রীনগর, জোধপুর, ও আগরার বমানবন্দরে বোমাবাজি করেন, আমার একদম সন্দেহ নেই যে জিত ভারতের জনগনের ভারতের সেনার হবে।

এরই মধ্যে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ভারত অপরেশন ট্রাইডেন শুরু করে দেয়। এদিকে আমেরিকা পাকিস্তানের সমর্থনে সপ্তন নৌবহর পাঠান, অন্যদিকে ভারত ও রাশিয়ার চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া ও তাঁর অষ্টম নৌবহর পাঠান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই দেশ ও এই যুদ্ধে যুক্ত হয়ে পরেন। 

মাতা ইন্দিরা গান্ধী ঠিক করেছিলেন আমেরিকার সপ্তম নৌবহর ভারতের নিকট পৌঁছার আগে পাকিস্থান কে আত্মসমর্পণের জন্য বাধ্য করাতে হবে। আমেরিকা ও চিনের প্রভাবে পাকিস্থানি সেনাপ্রমুখ আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করলে, সেই সময় ভারতীয় সেনা ঢাকাকে তিনদিকে ঘিরে রেখেছিলেন ১৪/১২/১৯৭১ ভারতীয় সেনা ঢাকায় পাকিস্থানের গবর্নরের বাড়িতে হামলা করেন তখন সেখানে পাকিস্থানের সব বড় অফিসারা মীটিং এর জন্য জমা হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর পাকিস্থান দুর্বল হয়ে পড়েন এবং যুদ্ধ সমাপ্তির প্রস্তাব পাঠান, ভারত জানিয়ে দেন শুধু মাত্র আত্মসমর্পণেই যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভব। মাত্র ১৩ দিনে যুদ্ধের সমাপ্তি হয় ১৬/১২/১৯৭১ ভারতীয় সেনা পাকিস্থানের ৯৩ হাজার সেনাকে বন্ধী বানিয়েছিলেন। মাতা ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্থানের ইতিহাস না শুধু মানচিত্র ও পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। 

পূর্ব পাকিস্থান কে আলাদা করে নতুন দেশ বাংলাদেশ গঠন করেছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী, এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হলেন শেখ মুজিবুর রহমান।

আজ হয়তো অনেকে জানেন না অথবা অনেকে জেনেও সে কথা স্মরণ করেন না সেই সময় বীরুধী নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী জি লোকসভায় বাড়িয়ে বলেছিলেন এ যে স্বয়ং মা দূর্গার অবতার।

৯ এপ্রিল ১৯৭১ ইংরেজি ভারতের ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে মাতা ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই (NSUI) এর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৪ মে ১৯৭৪ পুখরানে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ করিয়ে মাতা ইন্দিরা গান্ধী সারা বিশ্বকে নিজের সক্তি দেখিয়েছিলেন। মাতা ইন্দিরা গান্ধী তখন “Iron Lady” হয়ে উঠেছিলেন সত্তরের দশক ছিল মাতা ইন্দিরা গান্ধীর দশক। সেই সময় বলা হতো ক্যাবিনেটে একমাত্র পুরুষ ছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী। মাতা ইন্দিরা গান্ধী খুব দৃঢ় ছিলেন, তিনি অনেক কঠিন পরিস্তিথিতেও  খুব শান্ত থাকতেন। ১৯৭২ সালে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্ট যখন সিমলা চুক্তির ব্যাপারে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। মাতা ইন্দিরা গান্ধী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু ভুট্ট যখন সাংবাদিক সন্মেলনে বসেছিলেন তখন তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন, তখন মাতা ইন্দিরা গান্ধী ভুট্ট কে শুনিয়ে বললেন আপনি এনাদের চিন্তা করবেন না এনারা আপনাকে লোকতান্ত্রিক ও আমাকে দেশদ্রোহী বলে।

১৯৭১ এর সাধারন নির্বাচনে মাতা ইন্দিরা গান্ধী রাজ নারায়ণ কে নির্বাচনে হারিয়েছিলেন। তখন রাজ নারায়ণ নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর বিরুধে এলাহাবাদ হাইকোটে মামলা করেন। ১২জুন ১৯৭৫ এলাহাবাদ হাইকোর্ট মাতা ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচন বাতিল করে দেন। এই অবস্থায় ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সম্পূর্ণ আড়াই বৎসর ভারতে জরুরি অবস্থা লাগু ছিল। জরুরি অবস্থা চলা কালিন ভারতে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর বিরুধি আন্দোলন তীব্র আকার ধারন করেছিল।

জরুরি অবস্থা শেষ হলে ১৯৭৭ সালে দেশে সাধারণ নির্বাচন হয় এই নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় ঘটে, এবং স্বাধীনতার ৩০ বছর পর প্রথন অকংগ্রেসি সারকার গঠন হয়। এবং সেই নির্বাচনে স্বয়ং মাতা ইন্দিরা গান্ধীর পরাজয় হয়েছিল।

গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা নতুন মন্ত্রিসভার মুখ্য আলোচনার বিষয় যেন তেন প্রকারে মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে গ্রেপ্তার করতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি চৌধুরী চরণ সিং এর উপর প্রচণ্ড চাপ। চৌধুরী চরণ সিং চাইছিলেন সংবিধানের পবিত্রতা বজায় রেখে সংবিধান অনুযায়ী মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে অভিযুক্ত করতে, কিন্তু সহযোগীদের প্রবল চাপের ফলে ঠিক করা হয় ১ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হবে মাতা ইন্দির গান্ধী কে পরে ১ অক্টোবর রবিবার ও ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী থাকার ফলে ৩ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর বাড়িতে বিশাল পুলিশ বাহিনীসহ চৌধুরী চরণ সিং এর বিশ্বাসী সিবিআই অধিকর্তা এন, কে সিং হাজির হন। এদিকে সাঞ্জয় গান্ধী ও মেনকা গান্ধী দ্বারা সর্বত্র খবর ছড়িয়ে পড়ে। পার্টির কর্মকর্তা ও পদাধিকারি দের ভীর ক্রমশ বাড়তে থাকে। কিন্তু মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। মাতা ইন্দিরা গান্ধীর একটাই দাবি এরেস্ট ওয়ারেন্ট দেখাতে হবে, কিন্তু সিবিআই এবং পুলিশ শুধুমাত্র FIR এর কপি দেখান এবং কোন কপি দেওয়া যাবেনা বলে জানান। মাতা ইন্দিরা গান্ধী রাগান্বিত হয়ে জানতে চাইলেন “এটা কী নতুন চৌধুরী আইন”? এবং বলেন তবে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেপ্তের করতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশ জওহরলাল নেহরুর কন্যা যিনি ১১ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে যেন গ্রেপ্তের যেন না করা হয়। অবশেষে সন্ধ্যা ৭ টায় মাতা ইন্দিরা গান্ধী নিজে গাড়িতে বসে গ্রেপ্তার বরন করেন। কিন্তু পরদিনই কোর্ট থেকে ছাড় পেয়ে যান।

যারা মাতা ইন্দিরা গান্ধীর বিরুধে ছিল, তারা পরবর্তী সময়ে বিভক্ত হয়ে যান। ৩ বছরের মধ্যে মোরারজি দেশাইয়ের সরকার ভেঙ্গে যায়। তখন মোরারজি দেশাই চৌধুরী চরণ সিং এর নেতৃতে সরকার গঠন করেন এবং বাইরে থেকে তাঁকে সমর্থন করেন। কিন্তু এই সরকার ও ৬ মাসের মধ্যে ভেঙ্গে যায়।

১৯৮০ সালে পুনরায় নির্বাচন হয় মাতা ইন্দিরা গান্ধীর স্লোগান দিলেন "গড়িবি হাটাও", মাতা ইন্দিরা গান্ধীর প্রচেষ্টায় তখন কংগ্রেস ৩৭৪ আসনে জয়লাব করেন। 

মাতা ইন্দিরা গান্ধী কখনই উন্নয়নকে নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন যে লক্ষ্য হওয়া উচিত "সামাজিক ন্যায়বিচারের সাথে উন্নয়ন"। অতএব, অর্থনৈতিক নীতির বন্টনগত দিকগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল এবং তার সময়কালে দারিদ্র্য বিরোধী কর্মসূচিগুলির উন্নয়ন দেখা গিয়েছিল যা দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে বঞ্চিতদের স্বার্থ রক্ষার উপর দেশের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল।

তবে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে দরিদ্র এবং বঞ্চিতরাই কেবলমাত্র একটি সমজাতীয় গোষ্ঠী নয়।  সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং মহিলাদের নির্দিষ্ট সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য আলাদা আলাদা নীতির প্রয়োজন ছিল।  

জাতীয় একীকরণের জন্য সামাজিক সংহতির প্রয়োজন এবং সেইজন্য, জনসংখ্যার প্রতিটি অংশকে অবশ্যই কথা ও কাজের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের প্রত্যেকের "সামাজিক ন্যায়বিচারের সাথে উন্নয়ন" এর সামগ্রিক কাঠামোর মধ্যে বিশেষ নিতি নির্ধারণ করা হবে।

তার প্রত্যেকটি নীতি ও কর্মসূচী ছিল দেশের মানুষ সার্থে, তিনি দেশের প্রত্যেক বর্গের মানুষকে সমান মর্যাদা দিতেন। ঘৃনা ও ভয় জেন ওনার মধ্যে ছিলই না।

“Operation Bluestar”

পূর্ব পাঞ্জাবে আতংবাদ বেড়ে উঠেছিল। কোন একসময়ে ইন্দিরা গান্ধীর কাছের জার্নাল সিং ভিন্দ্রাওয়ালা পুরো পাঞ্জাবে উগ্রবাদের পথে ঠেলে দিয়েছিল। সমগ্র পাঞ্জাব জুড়ে স্বাধীন খালিস্থানের স্লোগান উঠতে লাগল, মাতা ইন্দিরা গান্ধীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। পাঞ্জাব কে উগ্রবাদের হাত থেকে রক্ষ্যা করতে, মাতা ইন্দিরা গান্ধী সেই সময় ভারতের সেনার সাহায্য নেওয়াটাই উচিৎ বলে মনে করেন, আর এরনাম দেওয়া হয় “Operation Bluestar” উগ্রবাদীরা তাঁদের লোকজনদের নিয়ে পাঞ্জাবেন স্বর্ণ মন্দিরে লুকিয়েছিলেন। ৫ জুন ভারতীয় সেনা স্বর্ণ মন্দিরের ভিতরে ঢুকে পড়েন অনেক গুলাগুলি হয় এবং সব উগ্রবাদীরা মারা যান। 

পাঞ্জাবের উগ্রবাদ তখনো শান্ত হয়ে যায়নি। ভারতীয় সুরক্ষা সংস্থা থেকে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর প্রান হানির সম্ভাবনার আঁচ করেন। দেহরক্ষীদের মধ্যে থাকা দুজন শিখ দেহরক্ষীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এই খবর মাতা ইন্দিরা গান্ধীর কানে গেলে তিনি খুব রেগে যান। এবং শিখ দেহরক্ষীদের ফিরিয়ে আনার আদেশ দেন। 

ভাবতে পারেন কত বড় ও মহান মানুষিকতার লোক হলে নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র দেশের মানুষ কাছে যেন ভূল বার্তা না যায় দেশের একতায় যেন আঘাত না আসে সেই জন্যে সেই দেহরক্ষীদের ফিরিয়ে আনার আদেশ দেন। 

তখন মাতা ইন্দিরা গান্ধী বিমর্শ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি তাঁর সব ভাষণে নিজের মৃত্যুর কথা বলতে লাগেলেন।

৩০/১০/১৯৮৪ ভুবনেশরের জনসভায় ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন।

ইন্দিরা গান্ধী – “I Shall Continue to serve until my last breath and when I die, I can say, that every drop of my blood will invigorate India and strengthen it.”

এই ভাষণে প্রণাম করেন যে তিনি তার মৃত্যু সম্পর্কে ওয়াকবহাল ছিলেন, তিনি জানতেন কি হতে চলেছে।

ইন্দিরা গান্ধী এই ভাষণ টি ছিল ঠিক তাঁর মৃত্যুর একদিন আগের। কে জানতেন যে ইন্দিরা গান্ধী তাঁর মৃত্যুর ভবিষ্যৎ বানী করছিলেন। ৩০ অক্টোবর অনেক রাতে ইন্দিরা গান্ধী ঘুমতে যান ও যাওয়ার আগে তাঁর সহায়ক আর কে ধাওয়ান কে পরদিনের সব সাক্ষাৎ বাতিল করে দিতে বলেন। শুধু বি বি সির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলেন।

৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪ ইংরেজি- ১ সাফদরজংগ রোড, সকাল ৯ টা মাতা ইন্দিরা গান্ধী তৈরি হয়ে বি বি সির এক সাক্ষাতের জন্য তাঁর বাড়ি থেকে বেরন। তাঁর সহায়ক আর কে ধবন তার সঙ্গে ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী গেইটে পৌঁছানোর আগেই তার দু দেহরক্ষী বিয়ন্ত সিং, এবং সতবন্ত সিং তার উপর গুলি চালাতে শুরু করে, ২৫ সেকেন্টের মধ্যে প্রায় ৩০ টি গুল লাগে ইন্দিরা গান্ধীর দেহে।

ইন্দিরা গান্ধীর রাক্তাক্ত দেহ সেখেনে পড়েছিল নিজ বাড়িতে নিজ বিশ্বাস ঘাতক দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী। মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই খবর সারা দেশে আগুণের মত ছড়িয়ে পড়ে, All India Institute Of Medical Science (AIIMS) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে সেই হাসপাতালের সামনে লোকের ভিড় জমতে থাকে। রাজীব গান্ধী তার পশ্চিমবঙ্গের সভা বাতিল করে দিল্লি ফিরে আসেন। বিকেলে রেডিও ও টিভিটে মাতা ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর সংবাদ পড়া হয়। 

বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মাতা ইন্দিরা গান্ধী চির নিদ্রায় শায়িত হলেন। মাতা ইন্দিরা গান্ধীর শেষ দর্শনের জন্য জনঢল লেগেছিল। সারা দেশের মানুষের চোখে জল ছিল। সারা দেশের মানুষ কাঁদছিলেন। তখন ভারতের অতীবপ্রিয় জননেত্রি ছিলেন মাতা ইন্দিরা গান্ধী, মাতা ইন্দিরা গান্ধী কে ছাড়া ভারতের কথা তখন স্বপ্নেও কেউ ভাবতে পারতেন না। গান্ধী পরিবারের জন্য এটা ছিল অতিব দুঃখের অধ্যায়, রাজীব ও সনিয়া নিজেদের সামলাচ্ছিলেন। ছোট রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা বুঝতে পেরেছিলেন তাদের ঠাকুরমা আর ফিরে আসবেনা। 

৩ নভেম্বর, ১৯৮৪ মাতা ইন্দিরা গান্ধীর অন্তিম যাত্রা বের হয়। ৯৪ টি দেশের প্রতিনিধি সামিল হয়েছিল এই যাত্রায়, রাজীব গান্ধী ইন্দিরা গান্ধীর মুখাগ্নি করেন। ধীরে ধীরে মাতা ইন্দিরা প্রিয়দশিনীর দেহ আগুনে পুড়ে লীন হয়ে যায়।

বিশ্বাস করবেন এই অধ্যায় টি লিখার সময় আমার হাত কাপছিল আমি অনুভব করতে পারছিলাম সেই দিনের বেদনা।

কিন্তু মাতা ইন্দিরা গান্ধী মৃত্যুর পরও অমর হয়ে আছেন তার ভারতের ১৩০ কোটি মানুষের মনে। আজও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের তুলনা করা হয় ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে, আমি জানিনা ভারতবর্ষের বুকে এই ধরনের মহীয়সী চরিত্র আর কখনো জন্মাবেন কিনা, বর্তমান এই বিশ্বাসে ওনার সঙ্গে তুলনা করা যায় এমন কোন ব্যাক্তি নেই, ভারতের রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধী এক অমর চরিত্র।

আজ ওনার জন্মবার্ষিকীতে এই মহান মানবিক আমার কোটি কোটি প্রণাম।

:- শ্রেয়শী লস্কর 

Comments

Popular posts from this blog

Ami Hindu / আমি হিন্দু

জালিয়ানওয়ালাবাগ

যুক্তিতে ভক্তি