কর্ম ফল

একজন ব্রাহ্মণ পূজারীর হঠাৎ ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয় মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর পর তিনি যখন স্বর্গে গেলেন তখন স্বর্গের দার রক্ষীরা তাকে স্বর্গে ঢুকতে দেননি।তাকে নরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তখন তিনি কিছু দিনপর স্বর্গের দার রক্ষীদের অনেক অনতি- মিনতি করে স্বর্গের দেবতার সঙ্গে দেখাকরার অনুমতি নেন।

তিনি স্বর্গের দেবতা ইন্দ্রের সঙ্গে দেখা করে তাকে জিজ্ঞাসা করেন।

পূজারী - ভগবান আমি সারা জীবন আপনার পূজায় নিমক্ত ছিলাম, আপনার ভক্ত হয়ে জীবন জাপন করেছি তবু কেন স্বর্গে আমার ঠাঁই হল না।

দেবরাজ ইন্দ্র - হেসে বল্লেন। তুমের মতো ভক্ত পেয়ে আমি তুষ্ট।

পূজারী - তবে কেন আমার নরক বাস।

দেবরাজ ইন্দ্র - তুমি সারা জীবন আমার পূজা ঠিকই করেছ। তুমার ভক্তিতে আমার কুনু সন্দেহ নাই।
তবে মনে করে দেখ গরীব মাতৃহীন নাপিতের ছেলে যখন একটু খাবারের জন্য তুমার কাছে এসেছিল তুমি কি তাকে খাবার দিয়েছিলে।

পূজারী - মাথা নিচু করে, আজ্ঞে ভগবান সে তো ছুটলুক নাপিতের ছেলে তাকে কী করে আপনার প্রসাদ দেই।

দেবরাজ ইন্দ্র - মুচকি হেসে! যখন বহির রাজ্যের গরীব মুসলিম ফকির আমার মন্দিরের পাশে থাকার জন্য একটু ঠাঁই চেয়েছিলেন তুমি কি দিয়েছিলে তাকে একটু থাকার জন্য জায়গা।

পূজারী - ক্ষমা করবেন ভগবান মুসলমানকে কী করে আপনার মন্দিরের পাশে থাকতে দেই এ তো অসম্ভব। এতে আমার ধর্ম জাবে।

দেবরাজ ইন্দ্র - পূজারী তাকিয়ে দেখ স্বর্গের চারদিকে, এখানে যেমুন হিন্দু থাকে তেমুন ই মুসলিম ও থাকে।

পূজারী - অবাক হয়ে! এ কী করে সম্ভব ভগবান।

দেবরাজ ইন্দ্র - সমগ্র মানব জাতী আমার সৃষ্টি আমি যখন ছুট- বড়, হিন্দু- মুসলিম কারুর মধ্যে তফাৎ দেখিনা তখন তুমরা কে তাদের মধ্যে তফাৎ করার।

ইন্দ্র - এই সমাজের সকল মানুষ আমার সন্তান। একজন ব্রাহ্মণ সন্তান হিসাবে মানব সেবাই তুমার পরম ধৰ্ম। কিন্তু তুমি তা না করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করেছ, আমার সন্তানদের মধ্যে তফাৎ করার অপরাধে আমি তুমায় নরক বাস দিলাম।

"মানুষের সেবা করা হচ্ছে ঈশ্বরের সেবা করা"- স্বামী বিবেকানন্দ

~শ্রেয়শী লস্কর ~

Comments

Popular posts from this blog

জালিয়ানওয়ালাবাগ

ত্রিপুরার আদিবাসী অঞ্চল স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদ

২১ মে – শহিদ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি